বারিমন্ডল (সমুদ্র স্রোত এবং জোয়ার ভাটা) SAQ

 সমুদ্রস্রোত

 1. সমুদ্র জলের একস্থান থেকে অন্যস্থানে সঞ্চালন কে কি বলে? 

       উঃ    সমুদ্রস্রোত।  

2. সমুদ্র জলের উপর নিচে উলম্বভাবে আলোড়ন কে কি বলে? 

       উঃ    সমুদ্র তরঙ্গ 

3. উষ্ণতার তারতম্য অনুসারে সমুদ্রস্রোত কত প্রকার ও কি কি? 

       উঃ    দুই প্রকার উষ্ণ স্রোত এবং শীতল স্রোত। 

4. সমুদ্রের কোন অংশে উষ্ণ স্রোত প্রবাহিত হয়? 

       উঃ    সমুদ্রের জলের উপরিভাগে বা সমুদ্রপৃষ্ঠ বরাবর। 

5. শীতল স্রোত কোন অংশে প্রবাহিত হয়? 

        উঃ    সমুদ্রের নিম্নাংশ দিয়ে অন্তঃস্রোত রূপে প্রবাহিত হয়। 

6. সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির প্রধান কারণ কি? 

         উঃ  নিয়ত বায়ুপ্রবাহ। 

7. পৃথিবীর আবর্তন গতির সঙ্গে সমুদ্রস্রোতের সম্পর্ক কি? 

        উঃ  পৃথিবীর আবর্তন গতির জন্য সমুদ্রের জল উত্তর গোলার্ধের ডান দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে যায়।

8. উষ্ণ অঞ্চল থেকে শীতল অঞ্চলের দিকে সমুদ্রস্রোত কিভাবে প্রবাহিত হয়? 

        উঃ  পৃষ্ঠ প্রবাহ রূপে সমুদ্র জলের উপরিভাগে দিয়ে প্রবাহিত হয়। শীতল অঞ্চল থেকে উৎস অঞ্চলের দিকে। 

9. শীতল অঞ্চল থেকে উষ্ণ অঞ্চলের দিকে সমুদ্রস্রোত কিভাবে প্রবাহিত হয়? 

         উঃ  সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে অন্তঃস্রোত রূপে প্রবাহিত হয়।

10. ঋতুভেদে দিক পরিবর্তনকারী সমুদ্র স্রোতের নাম কি? 

         উঃ   মৌসুমী স্রোত। উত্তর পূর্ব মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর-পূর্ব দিক দিয়ে এবং দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক দিয়ে প্রবাহিত হয়।

11. দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি স্রোত কখন প্রবাহিত হয়? 

         উঃ   গ্রীষ্মকালে। 

12. উত্তর-পূর্ব মৌসুমি স্রোত কখন প্রবাহিত হয়? 

         উঃ    শীতকালে। 

13. হিমপ্রাচীর কি? 

          উঃ    উষ্ণ ও শীতল স্রোতের মিলনস্থলে যে স্পষ্ট সীমারেখা দেখা যায়, তাকে হিমপ্রাচীর বলে। 

14. উষ্ণ এবং শীতল সমুদ্র জলের রং কেমন হয়? 

           উঃ   উষ্ণ সমুদ্রস্রোত নীল বর্ণের হয় এবং শীতল সমুদ্রস্রোত সবুজ বর্ণের হয়।

15. হিমপ্রাচীর কোথায় দেখা যায়? 

          উঃ    আটলান্টিক মহাসাগরের নিউফাউন্ডল্যান্ড উপকূলে। উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোত এবং শীতল ল্যাব্রাডর স্রোতের মিলনস্থলে হিমপ্রাচীর দেখা যায়। এবং 

               উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরে জাপান উপকূলে উষ্ণ কুরসীয় স্রোত এবং শীতল ওয়াসিও বা বেরিং স্রোতের মিলনস্থলে দেখা যায়।

16. মগ্নচড়া কি? 

          উঃ    সমুদ্রস্রোতের সঙ্গে বাহিত হিমশৈলের মধ্যস্থিত পদার্থ অগভীর সমুদ্রের সঞ্চিত হয়ে যে অগভীর চড়ার সৃষ্টি করে তাকে মগ্নচড়া বলে। 

17. উষ্ণ এবং শীতল স্রোতের মিলনস্থলে কি ধরনের বায়ুমণ্ডলীয় গোলযোগে দেখা যায়? 

           উঃ   কুয়াশা, ঝড়ঝঞ্জা, ঘূর্ণিঝড় প্রভৃতি সৃষ্টি হয়।  

18. আটলান্টিক মহাসাগরের মগ্নচড়া গুলির নাম লেখ।

          উঃ    গ্র্যান্ড ব্যাংক, জর্জেস ব্যাংক, রকফল ব্যাংক, সেভিংস ব্যাংক প্রভৃতি।   

19. পৃথিবীর বৃহত্তম মগ্নচড়ার নাম কি? 

           উঃ     গ্র্যান্ড ব্যাংক। 

20. কোথায় সামুদ্রিক মৎসের বৃহৎ সমাবেশ ঘটে মগ্নচড়ায়? 

           উঃ   মগ্নচড়ায় বা মহিসোপান অঞ্চলে। 

21. এলনিনো কি? 

         উঃ   পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগর (পেরু, চিলি উপকূল) এর একটি উষ্ণ সমুদ্রস্রোত হল  এলনিনো। 

22. লা নিনা কি? 

          উঃ  এল নিনোর বিপরীত অবস্থা কে লা নিনা বলে। পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের উষ্ণস্রোত এর পরিবর্তে শীতলস্রোত প্রবাহিত হয় একে লা নিনা বলে। 

`13. ব্যাংক কথাটির অর্থ কি? 

         উঃ   মগ্নচড়া। 

14. প্লাংকটন কথার অর্থ কি? 

         উঃ  ঘুরে বেড়ানো।

15. আটলান্টিক মহাসাগরের সমুদ্র স্রোত গুলির নাম লেখ। 

     উঃ  ক) উত্তর আটলান্টিক মহাসাগর 

                    উষ্ণ সমুদ্রস্রোতঃ  উপসাগরীয় স্রোত, ইরমিঙ্গার স্রোত, উত্তর আটলান্টিক স্রোত, ক্যারিবিয়ান স্রোত, বাহামা স্রোত, ফ্লোরিডা স্রোত, উত্তর নিরক্ষীয় স্রোত, গিনি স্রোত।

                    শীতল স্রোতঃ  ল্যাব্রাডর স্রোত, পূর্ব গ্রীনল্যান্ড স্রোত, ক্যানারি স্রোত।


        খ) দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরঃ 

                    উষ্ণ স্রোতঃ  দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোত, ব্রাজিল স্রোত।

                   শীতল স্রোতঃ  শীতল কুমেরু স্রোত, ফকল্যান্ড স্রোত, বেঙ্গুয়েলা স্রোত।


16. প্রশান্ত মহাসাগরের সমুদ্র স্রোতঃ- 

     উঃ  ক) উত্তর প্রশান্ত মহাসাগর 

                 উষ্ণ স্রোতঃ  কুরোশিও বা জাপান স্রোত, সুসিমা স্রোত, উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরীয় স্রোত, উত্তর নিরক্ষীয় স্রোত, আলাস্কা স্রোত।

                শীতল স্রোতঃ বেরিং স্রোত, ওয়াশিও স্রোত, ওখটস্ক স্রোত, ক্যালিফোর্নিয়া স্রোত।


        খ) দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগর 

               উষ্ণ স্রোতঃ  দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোত, নিউ সাউথ ওয়েলস স্রোত।

              শীতল স্রোতঃ কুমেরু স্রোত, হামবোল্ড বা পেরু স্রোত।


17. ভারত মহাসাগরের সমুদ্র স্রোত

      উঃ  ক) দক্ষিণ ভারত মহাসাগর 

                উষ্ণ স্রোতঃ দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোত, মাদাগাস্কার স্রোত, মোজাম্বিক স্রোত, আগুলহাস স্রোত।

               শীতল স্রোতঃ কুমেরু স্রোত, পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া স্রোত। 


        খ) উত্তর ভারত মহাসাগরঃ 

               উষ্ণ স্রোতঃ সোমালি স্রোত, মৌসুমী স্রোত (উত্তর-পূর্ব মৌসুমী স্রোত এবং দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী স্রোত)



জোয়ার ভাটা

1. জোয়ার ভাটা কি? 

      উঃ   সমুদ্র বা নদীর জল ফুলে ওঠাকে জোয়ার বলে এবং নেমে যাওয়াকে ভাটা বলে।

2. জোয়ার ভাটা সৃষ্টির কারণ কি? 

      উঃ   চন্দ্র ও সূর্যের আকর্ষণ বল এবং পৃথিবীর আবর্তন জনিত কেন্দ্রাতিগ বল।

3. পৃথিবীতে জোয়ার ভাটা সৃষ্টির প্রধান কারণ কি? 

      উঃ  চন্দ্রের আকর্ষণ।

4. পৃথিবীর উপর চাঁদের আকর্ষণ বল সূর্যের আকর্ষণ বলের তুলনায় কত বেশি? 

      উঃ  2.2 গুণ।

5. চন্দ্রের আকর্ষনে কোন জোয়ার হয়? 

      উঃ  চান্দ্র জোয়ার।

6. সূর্যের আকর্ষণে কোন জোয়ার হয়? 

      উঃ  সৌর জোয়ার।

7. মুখ্য জোয়ার কি কারনে হয়? 

     উঃ  মূলত চন্দ্র ও সূর্যের আকর্ষণ কিন্তু চন্দ্রের আকর্ষণ প্রধান।

8. গৌণ জোয়ার কেন হয়? 

     উঃ  কেন্দ্রিক বলের প্রভাবে গৌণ জোয়ার হয়। এই বল কেন্দ্র বহি:র্মুখী বল নামেও পরিচিত।

9. জোয়ার ভাটার সময়ের ব্যবধান

  •        দুটি মুখ্য জোয়ারের মধ্যে সময়ের ব্যবধান   →  24 ঘন্টা 52 মিনিট। 
  •        দুটি গৌণ জোয়ারের মধ্যে সময়ের ব্যবধান →   24 ঘন্টা 52 মিনিট। 
  •        একটি মুখ্য জোয়ার এবং একটি গৌণ জোয়ারের মধ্যে সময়ের ব্যবধান → 12 ঘন্টা 26 মিনিট। 
  •        একটি ভাটা ও পরবর্তী ভাটার মধ্যে সময়ের ব্যবধান →  12 ঘন্টা 26 মিনিট। 
  •        একটি ভাটা ও একটি জোয়ারের মধ্যে সময়ের ব্যবধান →  6 ঘন্টা 13 মিনিট। 


10. চাঁদ পৃথিবীকে একবার পরিক্রমণ করতে কত সময় নেয়?  

       উঃ  27 দিন 8 ঘন্টা।

11. প্রতিদিন চাঁদ পৃথিবীর সাপেক্ষে কত পথ অতিক্রম করে? 

      উঃ  13° ডিগ্রী পথ।

12. প্রতিদিন দুটি মুখ্য জোয়ারের মধ্যে সময়ের ব্যবধান কত? 

      উঃ   52 মিনিট। 

13. দুটি গৌণ জোয়ারের মধ্যে সময়ের ব্যবধান কত পিছিয়ে যায়? 

      উঃ   52 মিনিট। 

14. কোন স্থানে দিনে কয়বার জোয়ার ভাটা হয়? 

      উঃ   দুবার।

15. সিজিগি কি? 

      উঃ  পৃথিবী সূর্য ও চাঁদের একই সরলরেখায় অবস্থানকে সিজিগি বলে। 

16. সংযোগ অবস্থান কি? 

     উঃ  অমাবস্যা তিথিতে পৃথিবী ও সূর্যের মাঝে চাঁদ থাকে। এরকম সিজিগি অবস্থানকে সংযোগ অবস্থান বলে।

17. প্রতিযোগ অবস্থান কি? 

      উঃ  পূর্ণিমা তিথিতে চাঁদ ও সূর্যের মাঝে পৃথিবী থাকে। এইরকম সিজিগি অবস্থাকে প্রতিযোগ অবস্থা বলে।

18. অ্যাপোজি কি? 

      উঃ  চাঁদের কেন্দ্র থেকে পৃথিবীর কেন্দ্রের দূরত্ব সর্বাধিক হলে তাকে অ্যাপোজি বলে। এই সময় দূরত্ব থাকে 407000 কিলোমিটার।

19. পেরিজি কি? 

      উঃ   চাঁদ এবং পৃথিবীর দূরত্ব সবচেয়ে কম হলে তাকে পেরিজি অবস্থান বলে। দূরত্ব থাকে 356000 কিলোমিটার।

20. ভরা জোয়ার কখন হয়? 

      উঃ   অমাবস্যা তিথিতে এবং পূর্ণিমা তিথিতে।

21. মরা জোয়ার কখন হয়? 

       উঃ  শুক্ল এবং কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে। 

22. বানডাকা কি? 

       উঃ   ভরা জোয়ারের সময় সমুদ্রের জল উঁচু হয়ে 6 থেকে 7 মিটার উঁচু হয়ে উজানের দিকে অগ্রসর হলে, তাকে বানডাকা বলে। 

23. ষাঁড়াষাঁড়ি বান কি? 

       উঃ  বর্ষাকালে বানের জল সাত থেকে আট মিটার উঁচু হলে তাকে ষাঁড়াষাঁড়ি বান বলে।

24. নদীতে বান ডাকার কারণ কি? 

        উঃ  নদীর মোহনা ফানেল আকৃতির হলে এবং নদীতে বালির চড়া থাকলে নদীতে বান ডাকে।

25. কোন তিথিতে ভরা জোয়ার অধিক শক্তিশালী হয়? 

         উঃ  অমাবস্যা তিথিতে।

26. হুগলি নদীর মোহনায় কখন বান ডাকে? 

       উঃ  জুলাই-অগাস্ট মাসে। 

27. ভরা জোয়ারের সময় (অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে) সূর্য, পৃথিবী ও চাঁদের মধ্যে কত কোন উৎপন্ন হয়? 

        উঃ   180° ।  

28. মরা জোয়ারের সময় (শুক্ল ও কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে) সূর্য, পৃথিবী ও চন্দ্রের মধ্যে কত কোন উৎপন্ন হয়? 

        উঃ   90° । 

29. চাঁদ ও পৃথিবীর গড় দূরত্ব কত?

        উঃ    384800 কিলোমিটার।

30. কডাল কথার অর্থ কি? 

        উঃ  সমুদ্র। 

31. পৃথিবীর গড় ব্যাস কত? 

         উঃ  12742 কিলোমিটার (ব্যাসার্ধ 6371 কিলোমিটার)।

 



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url