জোয়ার ভাঁটা সৃষ্টির কারণ ব্যাখ্যা কর

 জোয়ার ভাঁটা সৃষ্টির কারণগুলি ব্যাখ্যা করো।


    চাঁদ ও সূর্যের আকর্ষণ এবং পৃথিবীর আবর্তনজনিত কেন্দ্রবহির্মুখী শক্তির প্রভাবে নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট সময় অন্তরে ভূ-পৃষ্ঠস্থ জলরাশির গড় সমুদ্র সমতলের তুলনায় বৃদ্ধি পাওয়াকে জোয়ার এবং হ্রাস পাওয়াকে ভাঁটা বলে।


সৃষ্টির কারণ :

(a) চাঁদ ও সূর্যের আকর্ষণ : 

         নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র অনুযায়ী মহাবিশ্বের যে কোনো দুটি বস্তু পরস্পর পরস্পরকে কেন্দ্র সংযোজক সরলরেখা বরাবর আকর্ষণ করে, আকর্ষণ বল বস্তুর ভরের গুণফলের সমানুপাতিক এবং মধ্যবর্তী দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক ।



       যদি ভর একমাত্র আকর্ষণের বিষয় হত তাহলে ভূ-পৃষ্ঠস্থ জলরাশির উপর চাঁদের তুলনায় সূর্যের আকর্ষণ বল অধিক ক্রিয়াশীল হত। কারণ, পৃথিবী চাঁদের তুলনায় ৫০ গুণ বড়ো এবং সূর্য ২৬৫ লক্ষ গুণ বড়ো।


      বাস্তবিক পক্ষে দেখা যায়, ভূ-পৃষ্ঠস্থ জলরাশির উপর চাঁদের আকর্ষণ এবং সূর্যের আকর্ষণের অনুপাত ৯:৪ বা ১১:৫। কারণ, পৃথিবীতে চাঁদের মধ্যবর্তী গড় দূরত্ব ৩.৮৪ লক্ষ কিমি এবং পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যবর্তী গড় দূরত্ব ১৪.৯৫ কোটি কিমি।


(b) পৃথিবীর আবর্তনজনিত কেন্দ্রবহির্মুখী শক্তি :

         পৃথিবীর আবর্তনের ফলে যে কেন্দ্রবহির্মুখী শক্তির সৃষ্টি হয় তার দ্বারা ভূপৃষ্ঠস্থ জলরাশির জল বাইরের দিকে বিক্ষিপ্ত হয়। এই বিক্ষিপ্ত হওয়ার মাত্রা নিরক্ষীয় অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি এবং মেরু অঞ্চলের দিকে ক্রমশ হ্রাস পায় কারণ এই শক্তির মান পৃথিবীর আবর্তন বেগের সঙ্গে সমানুপাতিক।


তীব্রতার নিয়ন্ত্রক : 

i) উপকূলের ঢাল : ঢাল বাড়লে জোয়ারের তীব্রতা বাড়ে। 

ii) জলের ঘনত্ব : লবণতার জন্যে বা পলির জন্যে জলের ঘনত্ব বাড়লে জোয়ারের তীব্রতা হ্রাস পায়। 

iii) দ্বীপ বা অন্তরীপের অবস্থান : জোয়ারের চলাচল পথে দ্বীপ বা অন্তরীপ থাকলে জলের পরিমাণ, গতিবেগ এবং গতির দিক পরিবর্তিত হয়।



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url