প্রবন্ধ- খেলাধূলা ও ছাত্রসমাজ

 খেলাধূলা ও ছাত্রসমাজ


ভূমিকা : 

       সুস্থ দেহ ও সুস্থ মনের সামগ্রিক স্বচ্ছন্দ বিকাশে একজন মানুষের ব্যক্তিত্ব পরিস্ফুট হয়। সুস্থ শরীর এবং সুস্থ মন বজায় রাখার সার্থকতম মাধ্যম হল দেহচর্চা-ব্যায়াম ও খেলাধূলা। বোধকরি সে কারণেই Health is wealth কথাটি আজ সর্বজন বিদিত। ছাত্র জীবন যদি শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে শৃঙ্খলা, লড়াই করার মানসিকতা, সহমর্মিতা নীরোগ শরীর গড়ে তুলতে হয়, তবে খেলার মাঠ হবে শ্রেষ্ঠ স্থান।


খেলাধূলার প্রাসঙ্গিকতা : 

      ব্যক্তিত্বের স্বচ্ছন্দ বিকাশ, অবিচল মনোভাব এবং প্রাণশক্তির স্ফুরণে খেলাধুলার ভূমিকা অপরিসীম। সর্বক্ষণের কাজ বা পড়াশোনার একঘেয়েমি শরীর মনকে ক্লান্ত করে। এক্ষেত্রে খেলাধুলাই পারে শরীর, মনকে সুস্থ সবল রেখে ব্যক্তিত্বের পূর্ণ জাগরণ ঘটাতে। ছাত্রজীবনে খেলাধুলা মানুষের জীবনকে সম্পূর্ণ করে। সঠিক ভারসাম্য এনে দেয়। তাই ছাত্রজীবনে খেলাধূলার প্রাসঙ্গিকতা আছে।


শিক্ষা এবং জাতীয়তাবোধের প্রকাশ : 

       খেলাধূলার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি মানসিক ও আধ্যাত্মিক চেতনার বিকাশ হয়। খেলাধুলা মানুষকে শৃঙ্খলিত হতে শেখায়, স্বদেশপ্রেমকে প্রভাবিত করে। গড়ে ওঠে একতা, নিঃস্বার্থপরতা, পারস্পরিক সহযোগিতার মনোভাব। পড়াশোনা ও খেলাধূলার সুষ্ঠু সমন্বয়ে ছাত্রজীবন থেকেই গড়ে ওঠে জাতীয়তাবোধের শিক্ষা। প্রতিযোগিতা জয়ে যেমন তার মনে অনাবিল আনন্দের জন্ম হয়, তেমনি পরাজয়ের ব্যর্থতা তাকে সহ্যশক্তি শেখায়। এতে করে বিকাশ ঘটে পূর্ণ চরিত্রের।


খেলাধূলার মাধ্যমে শিক্ষার নানা দিক : 

       বর্তমান সময়ে অভিভাবকেরা ছাত্রছাত্রীদের খেলাধূলা বিমুখ করে এত বেশি পড়াশোনায় আবদ্ধ করছেন যেন তাদের সঠিক বিকাশ ঘটছে না। একঘেয়েমি, ক্লান্তি, অবসাদ বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করছে তাদের দুর্বলচিত্তে। রোগগ্রস্ত এবং আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ছে আজকের শিশু। তাই খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে প্রথমে সচেতন করা দরকার অভিভাবকদের। এই খেলাধূলোর মধ্যে দিয়ে ছাত্রছাত্রীরা-

ক. বিনয়ী, নীতিনিষ্ঠ এবং শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনযাপন শিখতে পারে।

খ. মনের আলস্য দূর করতে পারে।

গ. দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়ে উঠতে সক্ষম হয়।

ঘ. কঠোর পরিশ্রম দ্বারা অন্যকে ছাপিয়ে যাওয়ার মানসিকতা গঠন করতে পারে।

ঙ. সুস্থ, সবল, নীরোগ স্বাস্থ্যের অধিকারী হতে পারে।


উপসংহার : 

       খেলাধুলার মাধ্যমেই একটি জাতির চরিত্র গঠিত হয়। তাই বলে পড়াশোনা বাদ দিয়ে খেলাধূলা নয়। দেহের বিকাশের জন্য যেমন খেলাধুলা করতে হবে, মনের বিকাশ ও উপযুক্ত শিক্ষালাভের জন্য পড়াশোনা করতে হবে। একজন আদর্শ চরিত্রের মানুষ এবং সফল খেলোয়াড় দেশে-বিদেশে শতশত সম্মান লাভ করেন। নিজের সুনাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশের সুনাম বৃদ্ধি ঘটে। ফলত, ছাত্রজীবন থেকেই পড়াশোনা ও খেলাধূলা সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারলে একজন আদর্শ।

মানুষ হয়ে ওঠা সম্ভবপর হবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url