উদ্বাস্তু সমস্যা সমাধানে ভারত সরকার কী কী উদ্যোগ গ্রহণ করে?

 উদ্বাস্তু সমস্যা সমাধানে ভারত সরকার কী কী উদ্যোগ গ্রহণ করে?  

           উভয় রাষ্ট্রের (ভারত ও পাকিস্তান) সংখ্যালঘুদের (উদ্বাস্তু) নিরাপত্তা বিধানের উদ্দেশ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকৎ আলি খান 1950 খ্রিঃ এক চুক্তি স্বাক্ষর করেন। একে “নেহেরু-লিয়াকৎ” চুক্তি বলা হয়। তবে এই চুক্তির প্রতি নেহেরু মন্ত্রিসভার অনেকেই আস্থা রাখতে পারেন নি। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও কে. সি. নিয়োগী মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করেন।


           এই চুক্তির পরেও উদ্ধাস্তুদের আগমন বন্ধ হয়নি। তারা যাতে তাদের স্থাবর সম্পত্তি ফিরে পান সে ব্যাপারে নেহেরু উদ্যোগী হলেও পূর্ব পাকিস্তানের ফেলে আসা সম্পত্তি হিন্দুরা যাতে ফিরে পান সে ব্যাপারে ভারত সরকারের উদ্যোগ দেখা যায়নি। সরকার পশ্চিম পাঞ্জাবের থেকে আগত উদ্বাস্তুদের ব্যাপারে সুপরিকল্পিত পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিলেও বাঙালি উদ্ধাত্তুদের ক্ষেত্রে তেমন পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়নি। পশ্চিমবঙ্গ ও পূর্ব পাঞ্জাবের উদ্ধাস্তুদের নেহরুর এরকম আলাদা আলাদা নীতির ফলে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। তৎকালীন উদ্বাস্তু কমিশনার শ্রী হিরণ্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের “উদ্বাস্তু” প্রভৃতি গ্রন্থে যথেষ্ট তথ্য দিয়ে এই বিতর্ক দেখানো হয়েছে।


          সরকারের তরফে যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ দেখা দিলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল ছিল। উদ্ধাস্তু-শিবির, ত্রাণ শিবির, বাসস্থান তৈরি, জীবিকার ব্যবস্থা করা ইত্যাদি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। বাঙালি উদ্বাস্তুরা শিয়ালদহ, হাওড়া স্টেশনে, ফুটপাতে, খোলা আকাশের নীচে, নদীয়া জেলার কুপার্স পি. এল. হোম, রূপশ্রী পল্লী রাণাঘাট পি.এল.হোম, ধলিয়া পি.এল. হোম সহ বিভিন্ন উদ্বাস্তু শিবিরে থাকতে বাধ্য হয়েছিল।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url