ভারত সভার প্রতিষ্ঠা ও বিকাশে সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জির ভূমিকা

 ভারত সভার প্রতিষ্ঠা ও বিকাশে সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জির ভূমিকা: 


     জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার পূর্বে ঐক্যবদ্ধ ভারত গড়ে তোলার ভাবনায় প্রভাবিত হয়ে ইংরেজদের বিরুদ্ধে একটি সর্বভারতীয় রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তোলার কথা প্রথম সংহতভাবে চিন্তা করেছিলেন সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে ২৬ শে জুলাই সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, আনন্দমোহন বসু, শিবনাথ শাস্ত্রী, কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখদের নিয়ে কলকাতার অ্যালবার্ট হলে 'ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন' বা ‘ভারতসভা' প্রতিষ্ঠা করেন।


      ভারতসভা প্রতিষ্ঠার পূর্বে প্রায় সব ‘সভা-সমিতি' ছিল একদিকে আঞ্চলিক এবং অন্যদিকে জমিদার ও ধনী শ্রেণি নিয়ন্ত্রিত। সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতসভার দরজা উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন শিক্ষিত মধ্যবিত্ত ও সাধারণ মানুষের জন্য। এখানে বাৎসরিক চাঁদার হার ৫ টাকা হলেও কৃষকদের দিতে হতো মাত্র ১ টাকা।


       শুধু জমিদার শ্রেণির নয় মধ্যবিত্ত শ্রেণির দাবি ও অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ভারতসভা সোচ্চার হয়েছিল। যেমন- 

(১) সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার বয়সসীমা ২২ বছর করা ।

(২) নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন (১৮৭৬ খ্রি:), দেশীয় ভাষায় সংবাদপত্র আইন (১৮৭৮ খ্রি:), ‘অস্ত্র আইন'-এর মতো দমনমূলক আইন প্রত্যাহার। 

(৩) শোষণমূলক আমদানি শুল্ক আইন প্রত্যাহার। 

(৪)প্রতিনিধিমূলক শাসন পরিষদ, স্বায়ত্ব শাসন প্রবর্তন। 

(৫) বিচার বিভাগে ভারতীয়দের শেতাঙ্গদের সমঅধিকার। 

          এই উদ্দেশ্যে ভারতসভা ইলবার্টবিলকে সমর্থন করে ছিল। পাশাপাশি ভারতসভা ‘কৃষকদের স্বার্থে বেশ কিছু ‘রায়ত সভা' গঠন করে। পাবনা-বিদ্রোহে কৃষকদের ও আসামের চা বাগানে কুলিদের পাশে দাড়িয়েছিলেন ভারতসভার সদস্যরা। সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাগ্মিতা ও সাংগঠনিক দক্ষতায় বাংলায় প্রায় ১২৪ টি শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল শুধু তাই নয়। 'বাংলার মুকুটহীন রাজা' ভারত ভ্রমণ করে লক্ষ্মৌ, মিরাট, লাহোরে ভারতসভার শাখা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন