মহাবিদ্রোহের (১৮৫৭) প্রতি শিক্ষিত বাঙালি সমাজের মনোভাব কীরূপ ছিল?
মহাবিদ্রোহের (১৮৫৭) প্রতি শিক্ষিত বাঙালি সমাজের মনোভাব কীরূপ ছিল?
১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের সূত্রপাত বাংলার বহরমপুর ও ব্যারাকপুর থেকে হলেও বাংলায় এই বিদ্রোহের প্রভাব ও প্রসার সেভাবে ঘটেনি। মহাবিদ্রোহে বিদ্রোহীদের প্রতি শিক্ষিত বাঙালি সমাজের ছিল বিরূপ মনোভাব। অন্যদিকে ইংরেজ সেনা ও শাসকদের প্রতি ছিল সহানুভূতিশীল।
দিল্লী ও উত্তরভারতে উর্দু সংবাদপত্রগুলি বিদ্রোহ চলাকালীন বিদ্রোহীদের আত্মবিশ্বাস ও মনোবল বাড়িয়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। অন্যদিকে বাংলায় ‘সংবাদ প্রভাকর', ‘সংবাদ ভাস্কর', 'অরুণোদয়' এর মতো সংবাদপত্রগুলি বিদ্রোহীদের প্রতি তীব্র বিদ্বেষ প্রদর্শন করেছে ও ব্রিটিশ শাসনের প্রতি অবিচল আনুগত্য প্রদর্শন করেছে।
“ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন', ‘মহামেডান অ্যাসোসিয়েশন অব ক্যালকাটা'-র মতো অনেক সভা সমিতি এই বিদ্রোহকে নিন্দা করে সরকারকে সবরকমের সাহায্যের আশ্বাস দেয়।
সেই সময়ের শিক্ষিত বাঙালি সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে অক্ষয়কুমার দত্ত, ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত, কিশোরীচাদ মিত্র, রাজনারায়ণ বসু, দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখরা এই বিদ্রোহকে সমর্থন করেননি।
রাজা রাধাকান্ত দেব, জয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়-এর মতো গণ্যমান্য ব্যক্তিরা রীতিমতো সভা করে আসন্ন বিপদে সরকারকে সর্বতোভাবে সাহায্যের আশ্বাস দেয়।