ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য
ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলের অবস্থান এবং এই জলবায়ুর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
পৃথিবীর যে বিভিন্ন জলবায়ু অঞ্চলগুলি আছে, তার মধ্যে অন্যতম ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু।
ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলের অবস্থান
এই জলবায়ু অঞ্চলটি উভয় গোলার্ধে ৩০° থেকে ৪০° অক্ষরেখার মধ্যে অবস্থিত। উত্তর গোলার্ধে ইউরোপ মহাদেশের পোর্তুগাল, স্পেন, ফ্রান্স, ইটালী; এশিয়ার তুরস্ক, সিরিয়া, লেবানন; আফ্রিকার মিশর, আলজিরিয়া প্রভৃতি দেশ এবং দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন, অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড ও পার্থ, দক্ষিণ আমেরিকার চিলি ও পেরু দেশে ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু দেখা যায়। মহাদেশগুলির পশ্চিম অংশে মূলতঃ এই জলবায়ুর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য
(i) উষ্ণতা :
এই জলবায়ুতে গ্রীষ্মকালীন গড় উষ্ণতা ২১°সে – ২৭°সে এবং শীতকালীন গড় উষ্ণতা ৫°সে – ১০°সে থাকে। গ্রীষ্মকাল উষ্ণ ও শুষ্ক। শীতকাল মৃদু শীতল হয়। বার্ষিক গড় উষ্ণতা ১৬°সে এবং উষ্ণতার প্রসর প্রায় ১৫°সে হয়।
(ii) বৃষ্টিপাত :
বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ২৫-৭৫ সেমি হয়। গ্রীষ্মকালে বৃষ্টি হয় না। শীতকালে বৃষ্টি হওয়ায় শীতকাল আর্দ্র প্রকৃতির হয়। উত্তর গোলার্ধে ডিসেম্বর, জানুয়ারী, ফেব্রুয়ারী এবং দক্ষিণ গোলার্ধে জুন, জুলাই মাসে বৃষ্টি হয়। আর্দ্র পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে এই অঞ্চলে বৃষ্টি হতে দেখা যায়। শীতকালে বৃষ্টিপাত হওয়ায় এই অঞ্চলকে ‘শীতকালীন বৃষ্টিপাতের দেশ' বলা হয়।
(iii) অন্যান্য বৈশিষ্ট্য :
ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু মৃদু প্রকৃতির, তাই এই জলবায়ুকে ‘বিনোদনের জলবায়ু” বলা হয়। এই জলবায়ু অঞ্চলে বিভিন্ন রকমের ফলের চাষ হতে দেখা যায়। গ্রীষ্মকালে এই জলবায়ু অঞ্চলে জলভাগের উপর উচ্চচাপের অবস্থান দেখা যায়। পশ্চিমাবায়ুর গতিপথ অনুসারে বাতাস স্থলভাগ থেকে জলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়।