ভরা কোটাল বা ভরা জোয়ার এবং মরা কোটাল বা মরা জোয়ার।

প্রাবল্য অনুসারে জোয়ার দুই প্রকার, যথা - 

 i) ভরা কোটাল বা ভরা জোয়ার:- 

      পূর্ণিমা ও অমাবস্যা তিথিতে যখন সূর্য, চন্দ্র ও পৃথিবী একই সরলরেখায় অবস্থান করে তখন চাঁদ ও সুর্যের আকর্ষণ বলের প্রভাবে সমুদ্রে যে প্রবল জোয়ারের সৃষ্টি হয়, তাকে ভরা কোটাল বলে।

          ভরা কোটাল দুই তিথিতে দুইভাবে উৎপত্তি লাভ করে,- 


ক) অমাবস্যা তিথি ( সংযোগ অবস্থান)

        অমাবস্যা তিথিতে একই সরলরেখায় পৃথিবীর একইদিকে চাঁদ, সূর্য অবস্থান করায় তাদের মিলিত আকর্ষণ বল পৃথিবীর একই দিকে ক্রিয়া করায় সমুদ্রের জল রাশির সর্বাধিক স্ফীত ঘটে, ফলে জোয়ার প্রবল হয়। অমাবস্যা তিথিতে সর্বাধিক প্রাবল্যযুক্ত ভরা কোটালের সৃষ্টি হয়।


খ) পূর্ণিমা তিথি (প্রতিযোগ অবস্থান)

        পূর্ণিমা তিথিতে একই সরলরেখায় পৃথিবীর একদিকে সূর্য এবং অপরদিকে চাঁদ অবস্থান করে। ফলে চাঁদের সামনে অবস্থিত সূর্যের জল রাশি চাঁদের আকর্ষণে স্ফীত হয়ে মুখ্য চন্দ্র জোয়ার এবং সূর্যের আকর্ষণে বিপরীত দিকে গৌণ সৌর জোয়ার হয়। অবশ্য তুলনায় পূর্ণিমায় জোয়ারের প্রাবল্য কম হয়।


ii) মরা কোটাল বা মরা জোয়ার

         কৃষ্ণ ও শুক্ল পক্ষের অষ্টমী তিথিতে চাঁদ ও সূর্যের পরস্পর বিরোধী দুর্বল আকর্ষণ বলের প্রভাবে যে মৃদু বা কম প্রবল জোয়ার হয়, তাকে মরা কোটাল বা মরা জোয়ার বলে।

         কৃষ্ণ ও শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে চাঁদ পৃথিবী এবং সূর্য পরস্পর সমকোণে অবস্থান করে। পৃথিবীর যেদিকে চাঁদ অবস্থান করে সেদিকে সমুদ্রের জল স্ফীত হয়ে জোয়ারের সৃষ্টি করে। পৃথিবী এবং চাঁদের সমকোণে অবস্থিত সূর্যের আকর্ষণেও সূর্যের সামনে থাকা অংশে জোয়ারের সৃষ্টি হয়। চাঁদ ও সূর্যের পরস্পর বিরোধী আকর্ষণ হওয়ায় জোয়ার প্রবল বা জোরালো হয় না। এই কারণে এই জোয়ারকে মরা জোয়ার বলে।

বৈশিষ্ট্য 

i) মরা জোয়ারের সময় চাঁদ সূর্য এবং পৃথিবী পরস্পর সমকোণে ( 90°) অবস্থান করে। 

ii) মরা কোটালের ক্ষেত্রে পৃথিবীর অধিকাংশ স্থান জুড়ে ভাটা হয়। 



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url