পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারে রামমোহনের অবদান

  হুগলি জেলার রাধানগর গ্রামে ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে (মতান্তরে ১৭৭৪ খ্রি.) রামমোহন জন্মগ্রহণ করেন। মুঘল সম্রাটদের কাছ থেকে তিনি 'রাজা' উপাধি পান। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ তাঁকে 'ভারত-পথিক' বলে সম্বোধিত করেছেন। ভারতের ধর্ম, শিক্ষা ও সমাজ-সংস্কারের কাজে তাঁর নিরলস সাধনা ও আত্মত্যাগের কারণে তাঁকে 'আধুনিক ভারতের জনক' বলে অভিহিত করা হয়। পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে রামমোহন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন।



অবদান: 

    পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারে রামমোহন রায়ের অবদান হল- 

(i) মনোভাব:  

১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার টাউনহলের এক সমাবেশে রামমোহন বলেন, “ইউরোপীয় ভদ্রশ্রেণির সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক শিক্ষা, সমাজ ও রাজনীতির উন্নয়নে সহায়তা করবে”। এর পূর্বে ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি লর্ড আমহার্স্টকে একটি পত্র দ্বারা এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের অনুরোধ জানান। এমনকি, কলকাতায় সরকারি সংস্কৃত কলেজ প্রতিষ্ঠার সময় তিনি বাধা দেন। এসবই পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রতি তাঁর ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করে।


(ii) হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠা : 

১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠার সময় রাজা রামমোহন রায় সদর্থক ভূমিকা নেন। অবশ্য ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার এ মত মানেন না।


(iii) বেদান্ত কলেজ প্রতিষ্ঠা : 

পাশ্চাত্য সমাজবিজ্ঞান, পদার্থবিদ্যা প্রভৃতি বিষয় শিক্ষাদানের জন্য রামমোহন ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে ‘বেদান্ত কলেজ' প্রতিষ্ঠা করেন।


(iv) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন : 

পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারের জন্য। তিনি ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় অ্যাংলো হিন্দু স্কুল, ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইন্সটিটিউশন প্রতিষ্ঠা করেন।


১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দে লন্ডনের ব্রিস্টল শহরে মেনিনজাইটিস রোগে রামমোহনের মৃত্যু হলে সেখানেই তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়। পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারে তাঁর অবদান যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। 


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url