মরু অঞ্চলে বায়ু ও জলধারার মিলিত কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ
শুষ্ক অঞ্চলে বায়ু ও জলধারার মিলিত কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপের বর্ণনা দাও।
মরু অঞ্চলে বায়ুর কার্যের প্রাধান্য দেখা যায়। মরুভূমি অঞ্চলে বৃষ্টি হলে বায়ু ও জলধারার মিলিত কাজের ফলে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে। শুষ্ক অঞ্চলে বায়ু ও জলধারার মিলিত কাজের ফলে গঠিত ভূমিরূপগুলি হলো—
i) ওয়াদি :—
‘ওয়াদি’ এই আরবী শব্দটির অর্থ শুষ্ক উপত্যকা। মরুভূমিতে প্রবল ধারায় বৃষ্টি হলে জলধারার ক্ষয়শক্তির দ্বারা অগভীর খাতের ন্যায় সৃষ্টি হয়। সাধারণ অবস্থায় খাতগুলি শুষ্ক থাকে। বৃষ্টি হলে সরু জলধারা খাতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। থর মরুভূমিতে তাই একে নালা বলে। এই প্রকার ভূমিরূপ ওয়াদি নামে পরিচিত।
ii) পেডিমেন্ট :-
‘পেডি' কথাটার অর্থ ‘পাদদেশ' এবং ‘মাউন্ট' বা ‘মন্ট' শব্দটির অর্থ পর্বত। মরু অঞ্চলে উচ্চভূমির পাদদেশে চওড়া, বিস্তীর্ণ, শিলাময় ভূমিভাগকে পেডিমেন্ট বলা হয়। ইনসেলবার্জের সামনের দিকে মূলত: পেডিমেন্ট সৃষ্টি হয়ে থাকে। আবহবিকার, বায়ু ও জলধারার সম্মিলিত কাজের ফলে পেডিমেন্ট সৃষ্টি হয়। এই ভূমিরূপ অংশের ঢাল মৃদু প্রকৃতির হয়।
iii) বাজাদা :-
পেডিমেন্টের সামনের অংশ বা সামনের মৃদু ঢালযুক্ত অংশে ছোট ছোট জলধারা বাহিত সুক্ষ্ম নুড়ি, বালি প্রভৃতি সঞ্চিত হয়ে সমভূমি সদৃশ ভূমিরূপ গঠন করে। একে বলা হয় বাজাদা বা বাহাদা। বাজাদা সমভূমি তুলনামূলকভাবে এবড়োখেবড়ো এবং অনুর্বর হয়।
iv) প্লায়া :
বাজাদা আরও ঢালু হয়ে এসে যখন কোন নীচু আবদ্ধ জলাভূমিতে মেশে তখন সেই জলাভূমিকে প্লায়া বলে। সাধারণত প্লায়া পেডিমেন্ট দ্বারা আবদ্ধ থাকে। অর্থাৎ বলা যায়, মরু অঞ্চলে বৃত্তাকারে পেডিমেন্ট অবস্থান করলে এবং তাদের কেন্দ্রস্থলে জলাভূমি অবস্থান করলে তাকে প্লায়া বলা হয়। পেডিমেন্ট থেকে জলধারাগুলি প্লায়াতে এসে মিলিত হয়। বৃষ্টি হলে তাই প্লায়া জলপূর্ণ হয়ে প্লায়া হ্রদে পরিণত হয়। শুষ্ক ঋতুতে প্লায়া জলশূন্য থাকে। তখন লবণের আস্তরণ দেখা যায়।